DiscoverSearch
বর্ষায় ধান রোয়া শেষ হলে আদিবাসীদের মধ্যে সাঁওতাল, ওঁরাও, মুন্ডা, বিরহড়, মাহালি প্রমুখরা এই উৎসব পালন করে থাকেন।[i] করম, করমা বা কারাম - ভাদ্রের চতুর্থী থেকে শুরু হয়ে পার্শ্বএকাদশী তিথি’তে শেষ হয়। স্থানীয় নদী বা পুকুর থেকে এক ডুবে টুপা বা ঝুড়িতে বালি তুলে এনে ভুট্টা, ছোলা, মুগ, ধান, গম, তিল, সরষে, যব ইত্যাদি শস্যবীজ ছড়িয়ে বা মিশিয়ে দিয়ে সাংগী জাওয়া পাতা হয়। শুধু একটি বীজের জাওয়া পাতলে তার নাম একাঙ্গী জাওয়া। এক একটা দলের এক একটা জাওয়া। পরের ছয় দিন সকালে-বিকেলে হলুদ বা মেথি গোলা জলে জাওয়ার অঙ্কুরিত গাছকে স্নান করিয়ে নাচ গান করে করমতীরা। করমতী মাত্রই তখন মা। জাওয়ার মা।

বর্ধমানের এই ভাঁজো উৎসবের সঙ্গে পুরুলিয়া (মানভূম) অঞ্চলের ‘করম’ বা ‘জাওয়া’ (‘জীয়ন’ থেকে জাওয়া) পরবের ঘনিষ্ঠ সাদৃশ্য আছে। প্রকৃতপক্ষে ‘ভাঁজো’ ও ‘করম’ একই শস্য-উৎসব,”[ii] পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি গ্রন্থে লেখক লিখছেন, “ ... ‘করম’ বা ‘জাওয়া’ উৎসব হল বপোনৎসব, আর ‘তুষু’ হল ফসলোৎসব। দু’টি উৎসবই কৃষিজীবন ভিত্তিক। করম উৎসব মেয়েদের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

বাঁকুড়া জেলার বিশিষ্ট ক্ষেত্র সমীক্ষক অনাদিকুমার মাহাত তাঁর দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে করম পরবের কথা বুঝিয়ে বলেছেন।

[i] পশ্চিমবঙ্গের আদিবাসী সমাজ, ধীরেন্দ্রনাথ বাস্কে, বাস্কে পাবলিকেশন, ২০১৩, কলকাতা, পৃ. ১৪০, ১৬২,

[ii] বাংলার লোকসংস্কৃতির সমাজতত্ত্ব, বিনয় ঘোষ, অরুনা প্রকাশনী, ১৪০৬, কলকাতা, পৃ.৪৬
View Podcast